২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে শুরু হয় নতুন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর মনে হচ্ছে মানুষ ইতিমধ্যে করোনাকে জয় করে ফেলেছে। সারা পৃথিবীব্যাপী মানুষ লক ডাউনে থাকতে থাকতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, যার ফলে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশগুলোতেও আমরা লক ডাউনের বিপরীতে আন্দোলন করতে দেখেছি।
আর অনেকেই ভাবতে শুরু করেছে করোনা সাধারণ জ্বর সর্দির মত একটা সাধারণ ভাইরাস। মানুষের দেহে বিদ্যমান অর্গান গুলো যদি কারো মধ্যে কিছুটা বিকল বা দুর্বল থাকে তাহলেই কেবল করোনা তাকে ভুগাবে। এছাড়াও অনেকে মনে করছে পৃথিবীর বড় বড় ধন-কুবেরদের ব্যবসা-বাণিজ্য রদবদল করার জন্য এই ভাইরাসকে ইচ্ছে করেই এত প্রচার করা হয়েছে। ধনীরা আরো ধনী হয়ে যাচ্ছে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অনেকেই ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রতিবছর বার্ষিক ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীর ফলে ভাইরাসজনিত রোগে তিন থেকে পাঁচ মিলিয়ন লোক আক্রান্ত হয় আর তার মধ্যে প্রায় মারা যায় আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক লোক। সুতরাং এটি এখনও বার্ষিক ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীর চেয়ে কম।
যদি বাংলাদেশের মানুষের কথা ভাবি, তবে বলতে হয় আমাদের মত ছোট দেশে এত জনসংখ্যা নিয়ে আসলে চাইলেও কোনো ভাবেই সামাজিক দূরত্ব হওয়ার কথা না। তাছাড়া বেশিরভাগই খেঁটে খাওয়া মানুষ। ক্ষুধার কষ্টের সাথে এখন অন্য যেকোনো কিছু অতি নগন্য। সবচেয়ে বড় কথা বাস্তবতা বড়ই কঠিন আর কখনো কখনো এটি অতি নির্মম, যেটা এই করোনাকালে আবার চোখে অঙ্গুলী দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
তারপরেও আমার মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া নির্দেশনার কথা সকলের শুনা এবং মেনে চলা উচিত, শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি কারন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া ঠিক হবে না। এই মুহূর্তে আমাদের সকলের সচেতনতাই এই রোগের একমাত্র প্রতিষেধক দুর্বল অর্গান বহনকারী বা বয়স একটু বেশি মানুষের জন্য। আর আপনি যদি এ নিয়মগুলো মেনে চলেন তবে আপনি সাধারণ সর্দি এবং ভাইরাসজনিত ফ্লু থেকে সহজেই বাঁচতে পারবেন। মনে রাখবেন ধনী-গরীব যেই হোক না কেন প্রকৃতির কাছে আমরা সবাই সমান।
অতএব পৃথিবীর এই দুঃসময়ে আসুন আমরা সবাই সবকিছু ভুলে, সব মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে একটা জিনিসে ভাবিত হয় কিভাবে আমরা এই বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারি। এটা অত্যন্ত সংক্রামক, এই ভাইরাসটি একেবারেই অন্যরকম। একটু সচেতনতা, একে-অপরের প্রতি একটু সহানুভূতি-সহায়তা এবং সতর্কতাই পারে আমাদের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে।